সে (ইউসুফ) তার খাদেমদেরকে বলল, ‘তারা যে পণ্যমূল্য দিয়েছে তা তাদের মাল পত্রের মধ্যে গোপনে রেখে দাও, যাতে তারা তাদের পরিবারবর্গের কাছে ফিরে গিয়ে তা জানতে পারে, তাহলে তারা আবার আসবে।’
তারপর যখন তারা তাদের পিতার কাছে ফিরে গেল তখন বলল, ‘হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য শষ্যের বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কাজেই আমাদের ভাইকে আমাদের সঙ্গে পাঠিয়ে দিন, যাতে আমরা শস্যের বরাদ্দ পেতে পারি, আমরা অবশ্যই তার হিফাযাত করব।’
(পিতা) বলল, ‘আমি কি তার ব্যাপারে তোমাদেরকে তেমনি বিশ্বাস করব ইতোপূর্বে যেমন তোমাদেরকে তার ভাইয়ের ব্যাপারে বিশ্বাস করেছিলাম? আল্লাহই উত্তম সংরক্ষক আর তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
তারা যখন তাদের মাল-পত্র খুলল তখন দেখতে পেল যে, তাদেরকে তাদের পণ্যমূল্য ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা বলল, ‘হে আমাদের আব্বাজান! আমরা আর কী চাই। এই দেখুন, আমাদের পণ্যমূল্য আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, আমরা আমাদের পরিবারের জন্য (আরো) খাদ্য আনব, আমাদের ভাইয়ের হিফাযাতও করব, আরো এক উট-বোঝাই মাল বেশি আনব, এ পরিমাণ সহজেই পাওয়া যাবে।’
(পিতা) বলল- ‘আমি তাকে তোমাদের সাথে কিছুতেই পাঠাবো না যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে শপথ কর যে, তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবেই যদি না তোমাদেরকে একযোগে ঘিরে ফেলা হয়।’ অতঃপর তারা যখন তার কাছে প্রতিজ্ঞা করল তখন সে বলল, ‘আমরা যে কথা বলছি আল্লাহই তার সাক্ষী ও অভিভাবক।’
পিতা বলল, ‘হে আমার সন্তানেরা! তোমরা এক দ্বার দিয়ে (মিসরে) প্রবেশ কর না, বরং ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে (মানুষের সন্দেহ কিংবা কুদৃষ্টি এড়ানোর জন্য)। আমি আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে তোমাদের কোনই উপকার করতে পারব না। আল্লাহ ছাড়া হুকুম দাতা কেউ নেই, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি, যারা নির্ভর করতে চায়, তারা তাঁর উপর নির্ভর করুক।’
তাদের পিতা যেভাবে আদেশ করেছিল যখন তারা সেভাবে প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে তা তাদের কোন কাজে আসল না। তবে ইয়া‘কুব তার মনের একটা অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল মাত্র। আমার দেয়া শিক্ষার বদৌলতে অবশ্যই সে ছিল জ্ঞানবান, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে অবগত নয়।
অতঃপর ইউসুফ যখন তাদের রসদপত্র প্রস্তুত করে দিল, তখন সে তার সহোদর ভাইয়ের রসদপত্রের ভিতর পান পাত্রটি রেখে দিল। তখন এক ঘোষক ঘোষণা দিল, ‘হে কাফেলার লোক! তোমরা নিশ্চয়ই চোর।’